বৃহস্পতিবার, ৭ই কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ,২৩শে অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

কুড়িগ্রামের চরে ভূমিদস্যুদের থাবা

আতিকুর রহমান, কুড়িগ্রাম উত্তর : ‘নদী ভাঙি যায়, বানের পানি ভাসে নিয়া যায়। এমনিতেই আমরা বাঁচি না। আগে ছাবেদ ডাকাইত চরের মানুষক জ্বালে খাইছে। এলা ওমার বেটা দুই জাল কাগজ করি জমি দখল করবেনছে। এলা আমরা যামো কোনটে, খামো কি। গরিব মানুষ কোনটে বিচার পাই না’- মানববন্ধনে এসে এমন করে ক্ষোভ জানালেন কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ি উপজেলার চর গোরকমন্ডপের আজিজার হক।

তবে এ ক্ষোভ শুধু আজিজারের একার নয় ফুলবাড়ি উপজেলার নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের অর্ধশতাধিক বাসিন্দাদের। সোমবার দুপুরে উপজেলার নাওডাঙ্গা জমিদার বাড়ির সামনে ‘ভূমিদস্যু ইয়াসিন, সাদ্দাম ও ডিবি পুলিশের কনস্টেবল গোলাপি বেগমের হাত থেকে পরিত্রাণ চাই‘ শীর্ষক মানববন্ধনে ভুক্তভোগীরা এসব কথা বলেন।

চর পেচাইয়ের জয়মুদ্দিন বলেন, ‘ভূমি অফিসের ভেন্ডার শহিদুল আর তুহিন দুইজনের মাধ্যমে প্রথমে ইয়াসিন আর সাদ্দাম তাদের বাড়ির চাকর, আত্মীয় স্বজনের নামে জাল দলিল বানায়। পরে সে জমি নিজের নামে কাগজ বানায় নিয়ে জমি দখল করে। আদালতের আশ্রয় নিলে সাদ্দামের বৌ ডিবির কনস্টেবল গোলাপির ষড়যন্ত্রে মিথ্যা নারী নির্যাতন ও মাদক মামলা দেয়। আমি জমি হারাইলাম, মিথ্যা মামলায় জেল খেটে আসছি।’

স্থানীয় সাবেক ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আমিন হোসেন বলেন, এই দুই ভাইয়ের যন্ত্রনায় চরের মানুষ অতিষ্ঠ। তাদের জমির বিচার করতে গিয়ে আমারও হেনস্তার শিকার হতে হয়েছে। সাদ্দামের বৌয়ের ষড়যন্ত্রে আমার ভাতিজার নামে মিথ্যা পরিত্যক্ত মাদক মামলা দেয়। পরবর্তীতে পিবিআইয়ের মাধ্যমে তদন্তে এই মাদককান্ডের মূল হোতা ইয়াসিনের নাম বের হয়ে আসলে তার নামে উল্টো মামলা হয়।

গোরকমন্ডলের আজিজুর হক বলেন, তারা দুই ভাই আমার জমি আমিন দিয়ে মাপি বের করি দিবার চায়া ৪০ হাজার টাকা নিছে। এখন এই টাকাও নাই জমিও পাইলং না।

ফুলমতির নজরুল ইসলামের বৌ মরিয়ম বেগম বলেন, আমার স্বামী কষ্ট করি জমি কিনিল। ১৭ বছর আমরা আবাদ করি খাই। এখন সে জমি জাল দখল করে দখলের চেষ্টা চালাচ্ছে।

ছড়া বেগম বলেন, আমার স্বামী আবু বক্কর সিদ্দিকের নামে কোন কালে চরে জমি ছিল না। এখন শুনি তার নামের জমি আছে, সে জমি নাকি সাদ্দাম কিনছে। এগলা সব ভুয়া কাগজ। ভেন্ডার তুহিন আর শহিদুল এসব বানাইছে।

গজেরকুটির শহিদুল ইসলাম বলেন, ফুলবাড়ীর রেজিস্ট্রার অফিসের আগে আমাদের লালমনিরহাটের ভূমি অফিস ছিল। সেখানকার বালাম এবং থাম বইয়ের যে পৃষ্ঠা গায়েব সেসব পৃষ্ঠার দলিল নাম্বার ব্যবহার করে জাল দলিল করে যাতে প্রমাণ করার সুযোগ না থাকে। ভূমি অফিসের অসাধু চক্র পাকিস্তান আমলের জাল স্টাম তৈরি করে ভুয়া দলিল বানায়। তারা ভূমি অফিসের কাগজপত্রও গায়েব করে।

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Tumblr
Telegram

, বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

যায়যায়কাল এর সর্বশেষ সংবাদ