
আসমা আক্তার সাথী, লোহাগড়া: নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার লোহাগড়া ইউনিয়ন ভূমি অফিসের নায়েব ইউনুসের বিরুদ্ধে ঘুষ বাণিজ্যের গুরুতর অভিযোগ উঠেছে।
ভুক্তভোগীদের দাবি, তিনি আর্থিক সুবিধা নিয়ে জমি সংক্রান্ত যেকোনো কাজ দ্রুত সম্পন্ন করেন। কিন্তু ঘুষ না দিলে বছরের পর বছর ফাইল আটকে রাখেন। এতে সাধারণ মানুষ চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।
ভূমি জালিয়াতির অভিযোগ সবচেয়ে আলোচিত একটি ঘটনায়, সামুকখোলা মৌজার ৫ শতক জমির মিউটেশন ৭ লক্ষ টাকার বিনিময়ে ৯ শতক করে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
জানা যায়, নোয়াগ্রাম ইউনিয়ন ভূমি অফিসে কর্মরত থাকা অবস্থায় নায়েব ইউনুস এ অনিয়ম করেন। জমিটির প্রকৃত মালিক আব্দুল মান্নান সরদারের দলিল নম্বর ১১৫৮/২০১০, কিন্তু ঘুষের বিনিময়ে ভুয়া দলিল (নম্বর ৬২/২৫, রেজিস্ট্রি তারিখ ০৩/০১/২০২৫) ব্যবহার করে মিউটেশন সম্পন্ন করা হয়।
ঘুষ ছাড়া হয় না কোনো কাজ শামুকখোলা মৌজার ৪৯৬ নম্বর আর এস খতিয়ানের জমির মালিক রিপন খন্দকার জানান, বাবার মৃত্যুর পর পৈতৃক সম্পত্তির মিউটেশন করতে গিয়ে নায়েব ইউনুসের কাছে ৩৫ হাজার টাকা ঘুষ দিতে বাধ্য হন। পরে আরও ৭ হাজার টাকা নেওয়া হলেও এক বছর পার হলেও মিউটেশনের কাজ শেষ হয়নি।
এছাড়া, মাধবাটি মৌজার শহীদ বিশ্বাসের ছেলে হাসিব বিশ্বাস অভিযোগ করেন, এক বছর আগে নায়েব ইউনুসকে ২৫ হাজার টাকা দেওয়ার পরও তার দাখিলা এখনো হয়নি। বারবার তাগাদা দিলেও শুধুই আশ্বাস দেওয়া হচ্ছে।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, দীর্ঘদিন ধরে নায়েব ইউনুস ঘুষের মাধ্যমে অনিয়ম করে আসছেন। টাকা দিলে অবৈধভাবে মিউটেশন, নামজারি, দাখিলা ইত্যাদি সম্পন্ন করেন, আর টাকা না দিলে ন্যায্য কাজও আটকে রাখেন। তার বিরুদ্ধে গণস্বাক্ষরসংবলিত অভিযোগপত্র জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং লোহাগড়া সহকারী কমিশনার (ভূমি) বরাবর পাঠানো হয়েছে।
এই বিষয়ে নায়েব ইউনুসের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে, একাধিকবার ফোন করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
প্রশাসনের প্রতি আহ্বান ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেছেন, প্রশাসনে নায়েব ইউনুসের প্রভাব এতটাই বেশি যে, কেউ তার বিরুদ্ধে মুখ খুললেও কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। তারা আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, এভাবে চলতে থাকলে সাধারণ মানুষ জমি নিয়ে চরম বিপদে পড়বে। দুর্নীতি আরও বাড়বে।
স্থানীয় সচেতন মহল ও ভুক্তভোগীরা নায়েব ইউনুসের বিরুদ্ধে দ্রুত বদলি ও তদন্ত ও আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।