শুক্রবার, ১৩ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ,২৭শে জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

থানচিতে ২ বছর পরে পাড়ায় ফিরল বম জনগোষ্ঠীর এক পরিবার

থানচি (বান্দরবান) প্রতিনিধি: কেএনএফ আতঙ্কে পালিয়ে যাওয়ার প্রায় ২ বছরে পরে বান্দরবানের থানচিতে বম সম্প্রদায়ের প্রাতা পাড়া বাসিন্দা বম জনগোষ্ঠীর ৫ সদস্যদের নিয়ে নিজ গ্রামের ফিরেছেন এক পরিবার।

বান্দরবানে ৬৯ পদাতিক ব্রিগেড এর অধীনস্থ ১৬ ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের সহায়তায় তাদের পাশে থেকে খাদ্য সামগ্রী ও ঔষধপত্রসহ বিভিন্নভাবে সহযোগিতা প্রদান করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

সুত্রে জানা গেছে, কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) সদস্যরা থানচি সদরে সোনালী ব্যাংক ও কৃষি ব্যাংকের ডাকাতি ঘটনার পরে বম জনগোষ্ঠীর প্রাতা পাড়াবাসিন্দারা নিরাপত্তা স্বার্থে বিভিন্নস্থানে পালিয়ে যায়। ওখানকার এলাকায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে গত ২০২৪ সালে সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানের ১২টি পরিবার ফিরেছেন। এরই ধারাবাহিকতায় দীর্ঘ ২ বছরে পরে আরো ১টি পরিবার ফিরেছে নিজ গ্রামের।

এদিকে বাকলাই পাড়া সাব-জোনে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, গত বৃহস্পতিবার দুপুরে দিকে উপজেলা সদর ইউনিয়নের সীমান্তে প্রাতা পাড়া বাসিন্দা ৫ সদস্যদের নিয়ে ১টি পরিবার নিজ গ্রামের প্রবেশ করেছেন। ওখানকার বাসিন্দাদের মাঝে সেনাবাহিনীর বাকলাই পাড়া সাব জোন ক্যাম্পের সেনাসদস্যদের কর্তৃক সুস্বাদু খাবার খাওয়ানো হয়। দীর্ঘ ২ বছরে পরে ফিরে আসার ১টি পরিবারের সদস্যদের মেডিকেল সহায়তাসহ ঔষুধপত্র প্রদান এবং চাল ৫কেজি, আটা ২কেজি, চিনি ২কেজি, তেল ২লিটার, ডাল ২কেজি, লবণ ১কেজি, চা-পাতা ১কেজি ও মসলা জাতীয় সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে।

তাঁরা আরো জানান, বান্দরবান রিজিয়নের উদ্যোগে চলতি সপ্তাহের গত বৃহস্পতিবার ১৬ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের অধিনায়ক এর পক্ষ থেকে বাকলাই পাড়া সাব-জোনের অন্তর্গত রেমাক্রী সীমান্তের দোলাচরন পাড়া বাসিন্দাদের ধর্মীয় উপাসনালয়ে আর্থিক অনুদানসহ ব্যাটারী, সোলার প্যানেল, লাইট বিতরণ করা হয়েছে। বাকলাই পাড়া সাব-জোনের সাবজোন কমান্ডার নেতৃত্বে সেখানে মেডিক্যাল ক্যাম্পেইন কর্মসূচির পরিচালনা করা হয়।

প্রাতা পাড়ার বাসিন্দা পারক্যালিং বম (৬৮) বলেন, ‘কেএনএফ সাথে নিরাপত্তা বাহিনীর সমস্যার কারণে তারা দীর্ঘ ২ বছর যাবৎ বনজঙ্গলে, বিভিন্ন আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে আশ্রয়ে ছিলেন। সেনাবাহিনীর আশ্বাসে তাঁরাও নিজ বাড়িতে ফিরে আসছে।’

নিজ বাড়িতে ফিরে আসার পরিবারের সদস্য রোয়াল বম, রুইশিং বম বলেন, ‘জীবন বাঁচার জন্যে বহু মাস ধরে বনজঙ্গলে ও আত্নীয়স্বজনে ঘরে খেয়ে না খেয়ে খুবই কষ্টেদিন কাটাচ্ছি। প্রায় ২ বছর পরে সেনাবাহিনীর সহায়তায় গ্রামের বসতভিটায় ফিরে আসছি, সেনাবাহিনীর মেডিকেল সহায়তাসহ ঔষুধপত্র ও বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করেছেন। বনজঙ্গল কিংবা অন্যত্রস্থান থেকে নিজ বসতবাড়িতে ফিরতে পেরে খুশি এবং সেনাবাহিনীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তাঁরা।

বাকলাই সেনা ক্যাম্পের অধিনায়ক মেজর আসিফ জুবায়ের জানান, বম জনগোষ্ঠীর প্রত্যাবাসন ও ফেরত আসা জনগোষ্ঠীর চাকুরীর ব্যবস্থা, আর্থিক সহযোগিতা এবং প্রয়োজনীয় খাবারের রসদ সরবরাহ ইত্যাদি ব্যাপারে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রত্যক্ষভাবে সহযোগিতা করেছেন। এলাকায় শান্তি সম্প্রীতি ও জনগণের উন্নয়ন এবং নিরাপত্তার জনিত বজায় রাখতে সবসময়ই সেনাবাহিনীর নিরলসভাবে কাজ করে আসছে, তা অব্যাহত থাকবে।

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Tumblr
Telegram

, বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *