কামাল উদ্দিন টগর, নওগাঁ প্রতিনিধি : নওগাঁর আত্রাইয়ে চলতি মৌসুমে পাটের ভালো ফলন হলেও দাম নিয়ে হতাশা পাট চাষিরা। পাট জাগ ও দাম নিয়ে চিন্তার ভাঁজ দেখা দিয়েছে পাট চাষি কৃষকের কপালে। এ ছাড়া শ্রমিক ও পানির অভাবে জাগ দিতে না পারায় অনেক কৃষকের পাট এখনও ক্ষেতেই রয়ে গেছে। কয়েকজন কৃষকের সাথে কথা বলে জানা গেছে, এক মন পাট ঘরে তুলতে প্রায় দুই হাজার পাঁচ শত টাকা খরচ হয়েছে। বর্তমান বাজারে দুই হাজার চার শত টাকা দরে পাট বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন।
উপজেলার কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এ অঞ্চলের কৃষকের প্রধান ফসল পাট। গত দুই বছরে কাঙ্খিত দাম পেয়ে এবার অধিক জমিতে পাট চাষ করেছেন কৃষকেরা। চলতি মৌসুমে আত্রাই উপজেলায় প্রায় ছয় হাজার পাঁচ শত হেক্টর জমিতে পাট চাষ করা হয়েছে। প্রতি বিঘায় ফলন হয়েছে বারো থেকে চৌদ্দ মন পর্যন্ত ফলন। নদী তীরবতী ও বিল অঞ্চলের আশ পাশের কৃষকরা পাট কেটে জাগ দিতে পারলেও উপজেলার বেশি ভাগ কৃষক এখনও পাট কেটে ক্ষেতেই রেখে দিয়েছেন। সাধারনত পাটের মৌসুম শেষ হলে কৃষকরা জমিতে ধান আবাদ করে থাকেন। কিন্তু জাগ দেওয়ার সমস্যা, শ্রমিক সংকট ও বাজারে প্রত্যাশিত দাম না থাকায় অনেকে পাট বিক্রি করতে পারছেন না। ফলে বীজতলা প্রস্তুত থাকলেও চাষিদের অনেকে এখনও ধান রোপন করতে পারেননি। এতে কৃষকদের মধ্যে হতাশার সৃষ্টি হয়েছে।
পাঁচুপুর ইউনিয়নের নবাবেরতাম্বু গ্রামের কৃষক জাহাঙ্গির হোসেন বলেন, গত দুই বছরে পাটের দাম ভালো থাকায় এ বছর এনজিও থেকে লোন নিয়ে তিনি পাঁচ বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছেন। বীজ রোপন থেতে শুরু করে এ পর্যন্ত প্রতিমন পাট ঘরে তুলতে প্রায় চব্বিশ-পঁচিশ শত টাকা খরচ হয়েছে। সে পাট এখন বাজারে বিক্রি হচ্ছে মন প্রতি দুই হাজার চারশত টাকা। লোকসান দিয়েই পাট বিক্রি করতে হচ্ছে কৃষকদের। একই ইউনিয়নের জয়সারা গ্রামের জালাল উদ্দিন জানান, দাম কম থাকায় এ বছর ক্ষেত থেকে পাট কাটতে ইচ্ছে করছে না তাঁর। তিনি জানান একজন শ্রমিককে রোজ সাত শত থেকে আট শত টাকা দিয়ে পাট কাটতে হচ্ছে। ক্ষেতের আশপাশে পানি না থাকায় দূরে নিয়ে জাগ দিতে হচ্ছে। এতে পরিবহন ব্যয় বাবদ আঁটি প্রতি পাঁচ- ছয় টাকা খরচ হচ্ছে। অনেকে পুকুর ভাড়া করে পাট জাগ দিচ্ছেন। সব মিলিয়ে এ বছর পাট চাষে কৃষকদের কোন লাভ হবে না। একই ইউনিয়নের মধ্য বোয়ালিয়া গ্রামের মকলেছুর রহমান চাঁদ বলেন, কয়েক বছরের তুলনায় এ বছরই পাটের দাম অনেক কম। পানি না থাকায় পাট জাগ দেওয়া অনেক কষ্টের ব্যাপার। এসব কষ্ট কথা বলে শেষ নাই।
উপজেলা কৃষি অফিসার তাপস কুমার রায় ফোন আলাপে তিনি জানান, গত দুই বছর পাটের দাম ভালো হওয়ায় এ বছর পাটের দাম ভালো হওয়ায়। এ বছর সে আমায় কৃষকেরা পাট চাষ করেছেন। উৎপাদনের লক্ষ্য মাত্রা ছাড়িয়েছে।পানির অভাবে কৃষকের পাট জাগ দিতে সমস্যা হচ্ছে।তবে কয়েক দিন ভারী বৃষ্টি হলে এ সমস্যা থাকবে না।পাটের দাম কিছু দিনের মধ্যে বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে।
রাজশাহী বিভাগ এর সর্বশেষ সংবাদ
পাটের বাম্পার ফলন হলেও দাম নিয়ে হতাশা পাট চাষিরা
- যায়যায়কাল
- আগস্ট ২২, ২০২৩
- ৭:১৫ অপরাহ্ণ
Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on tumblr
Tumblr
Share on telegram
Telegram