বুধবার, ১৮ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ,২রা জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

এর সর্বশেষ সংবাদ

বাঁশখালীর শহিদুল ইসলাম শশুর বাড়ি লোকজনদের আঘাতে হাসপাতালে কাতরাচ্ছে

মো. শফিকুল ইসলাম, চট্টগ্রাম: চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার ৭নং সরল ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের মিনজিরীতলা গ্রামের মাওলানা হাফেজ নুর হোসাইন এর ছেলে মাওলানা শহীদুল ইসলামকে একই ওয়ার্ডের খন্দকার পাড়া গ্রামের রাশেদুল ইসলামের ছোট বোন তাসলিমা আক্তারসহ তার পরিবারের লোকজন পূর্ব পরিকল্পিতভাবে স্বামীকে হত্যার উদ্দেশ্যে জোর করে বিষপান করানোসহ মাওলানা শহিদুল ইসলামকে রক্তাক্ত করার অভিযোগ উঠেছে।

বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, দুই বৎসর পূর্বে পার্শ্ববর্তী খন্দকারপাড়া গ্রামের রাশেদুল ইসলামের ছোট বোন তাসলিমা আক্তার পারিবারিকভাবে মিনজিরীতলা গ্রামের মাওলানা শহিদুল ইসলামের সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। বর্তমানে তাদের এক বছর দুই মাসের একটি পুত্র সন্তান রয়েছে। শুরুতে তাদের দাম্পত্য জীবন সুখের হলেও কয়েক মাস ধরে তাদের জীবনে অশান্তি নেমে আসে। মাওলানা শহিদুল ইসলামের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, বিয়ের পর থেকেই মাওলানা শহিদুল ইসলামকে মানসিকভাবে তার স্ত্রী তাসলিমা আক্তার প্রতিনিয়ত নির্যাতন করে যাচ্ছে। তাসলিমা আক্তারসহ তাদের পরিবারের লোকজন মিলে সব সময় তার স্বামী মাওলানা শহিদুল ইসলামকে পরিবার থেকে পৃথক হয়ে চট্টগ্রাম শহরে গিয়ে আলাদা বাসা ভাড়া করে বসবাস করার জন্য তাগিদ দিয়ে থাকেন।

অবশেষে তাসলিমা আক্তার ও তার পরিবারের লোকজনদের দেয়া মানসিক অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে দাম্পত্য জীবন সুখময় করার লক্ষ্যে মাওলানা শহিদুল ইসলাম তার পরিবারের লোকজনের কাছ থেকে স্ত্রী তাসলিমা আক্তারকে নিয়ে, বাড়ি থেকে বের হয়ে অন্যত্র বাসা ভাড়া করেন। ১০-১৫ দিন যাওয়ার পরই শহিদুল ইসলামের স্ত্রী তাসলিমা আক্তার বাবার বাড়ি বেড়াতে যাওয়ার কথা বলে স্বামী শহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে স্ত্রী তাসলিমা আক্তার তার বাবার বাড়ির লোকজনদের পরামর্শে কোন কারণ ছাড়াই বাঁশখালীতে ২১/১২/২০২২ইং তারিখে একটি মিথ্যা যৌতুক মামলা করেন। মামলা খবর পাওয়ার পর মাওলানা শহিদুল ইসলাম আইনের প্রতি শ্রদ্ধা দেখিয়ে উভয় পরিবারের আপস মীমাংসায় বাঁশখালী আদালত থেকে জামিনে মুক্তি পান। জামিনে মুক্তি পেয়ে মাওলানা শহিদুল ইসলাম তার স্ত্রীর সাথে গত ২৪/১২/২০২২ইং তারিখে স্বাভাবিকভাবে কথাবার্তা বলেন। তার স্ত্রী তাসলিমা আক্তার তার বাবার বাড়িতে মাওলানা শহিদুল ইসলাম কে বেড়াতে আসার অনুরোধ জানান। স্ত্রীর কথা মত ২৪/১২/২০২২ইং তারিখ রোজ শনিবার সকাল ৭টায় মাওলানা শহিদুল ইসলাম শশুর বাড়ি খন্দকার পাড়ায় বেড়াতে আসেন।

পরবর্তীতে তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন অর্থাৎ স্ত্রী তাসলিমা আক্তার সহ তার পরিবারের লোকজন মিলে মাওলানা শহিদুল ইসলামের খাবারের সাথে বিষ মিশিয়ে দেন। বিষ খাওয়ার পর মাওলানা শহিদুল ইসলাম ছটফট করে কাঁতরাতে থাকলে তার মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য দাঁড়ালো ব্লেড দিয়ে শ্বশুরবাড়ির লোকজন এলোপাতাড়ি ভাবে তার পুরো শরীর রক্তাক্ত করে ফেলে। মাওলানা শহিদুল ইসলামের মৃত্যু নিশ্চিত মনে করে, শশুর বাড়ির লোকজন তাকে হাত পা বেঁধে পার্শ্ববর্তী বিলের মধ্যে ফেলে রাখে।

এ ঘটনার বিষয়ে মাওলানা শহিদুল ইসলামের পিতা হাফেজ নূর হোসাইন আমাদের প্রতিবেদককে বলেন, পৃথিবীর মধ্যে মানুষ এত নিষ্ঠুর কিভাবে হতে পারে, মানুষের প্রতি মানুষের মায়া মমতা অনেক কমে গেছে। একজন স্ত্রী তার স্বামীকে তার বাবার বাড়িতে দাওয়াত করে নিয়ে পরিকল্পিতভাবে প্রাণে মেরে ফেলার পরিকল্পনা করেছে তা অত্যন্ত দুঃখজনক। তিনি আরো বলেন,আমার ছেলে শহিদুল ইসলামের রক্তাক্তের খবর পেয়ে আমি দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাকে উদ্ধার করে বাঁশখালীর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক শহিদুল ইসলামকে চিকিৎসা না দিয়ে মেঝেতে ফেলে রাখে। অনেক কাকুতি মিনতি করার পরও সেখানকার চিকিৎসক আমার ছেলের চিকিৎসা করেননি। পরবর্তীতে আমি আমার ছেলে মুমূর্ষ শহিদুল ইসলামকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসি। মাওলানা শহিদুল ইসলাম চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে।তার অবস্থা খুবই আশঙ্কাজন। বর্তমানে সে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তৃতীয় তলায় ১৩ নং ওয়ার্ডের ৪৬ নং বেডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছে।

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Tumblr
Telegram

বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

যায়যায়কাল এর সর্বশেষ সংবাদ