
মোঃ বেল্লাল হোসাইন নাঈম, নোয়াখালী: নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে ১৯৯০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় বেগম খালেদা জিয়া মহিলা দাখিল মাদ্রাসা। উপজেলার বজরার বগাদিয়া এলাকার নোয়াখালী-ঢাকা মহাসড়কের পাশেই অবস্থান এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিতে গত ৩৫ বছরেও উন্নয়নের ছিটেফোঁটা লাগেনি। যার একমাত্র কারণ সাবেক প্রধানমন্ত্রী ‘বেগম খালেদা জিয়া’ নামটি। বিগত আওয়ামী শাসনামলে কোনো ধরনের উন্নয়ন সহায়তা পায়নি প্রতিষ্ঠানটি।
জানা যায়, বগাদিয়া গ্রামের মৃত আব্দুল গফুর ১ একর ৪৭ ডিসিম জমি দান করেন প্রতিষ্ঠানটির জন্য। পরে তার ছেলে আহসান উল্লাহ ও মেয়ে শামসুন নাহারের অর্থায়নে নির্মিত হয় বেগম খালেদা জিয়া মহিলা দাখিল মাদ্রাসার অবকাঠামো।
এক তলাবিশিষ্ট প্রশাসনিক ও একাডেমিক ভবনে শিক্ষার্থীদের পাঠদান চলছে। আর্থিক সংকটের কারণে দ্বিতীয় তলার নির্মাণকাজ অসম্পূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। সেখানেই কোনো রকমে চলছে পড়াশোনা। প্রতিষ্ঠানটির পশ্চিম পাশে জরাজীর্ণ টিনশেট রুমে নবম-দশম শ্রেণির ক্লাস চলছে। বর্তমানে ভবন, আসবাবপত্র, সুপ্রিয় পানির সংকট রয়েছে মাদ্রাসাটিতে। যে কারণে ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষা কার্যক্রম। এলাকাবাসী ও প্রতিষ্ঠাতার ওয়ারিশদের অনুদানে এখন পর্যন্ত কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি।
শিক্ষকরা জানান, এখানে প্রথম শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠদান করা হয়। বেগম খালেদা জিয়া দাখিল মাদ্রাসা ৩০০ এর অধিক শিক্ষার্থী রয়েছে । ২০০২ সালে বিএনপি জোট সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন মাদ্রাসাটি এমপিওভুক্ত হয়। প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক-কর্মচারী রয়েছেন ১৬ জন।
মাদ্রাসা সুপার নূরুল আমিন জানান, ২০০৮ সাল থেকে তিনি এই প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বে রয়েছেন। নারী শিক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে এই মাদ্রাসাটি। মানসম্মত শিক্ষাব্যবস্থা, শিক্ষার্থীদের সমারোহ, যোগ্যতাসম্পন্ন শিক্ষকমণ্ডলী থাকলেও প্রতিষ্ঠানটি সরকারি উন্নয়ন সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত। প্রত্যন্ত এলাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গুলোতে সরকারি নানা সহায়তা পেলেও বঞ্চিত বেগম খালেদা জিয়া মহিলা দাখিল মাদ্রাসা। একটি নামের কারণে বৈষম্যের এমন নজির হয়তো পাওয়া দুষ্কর। বৈষম্যের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে সরকার পতন হলেও এখনো বৈষম্য বন্ধ হয়নি।
এলাকাবাসী জানান, উপজেলায় মহিলাদের শিক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখলেও বিগত সময়ে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি এই প্রতিষ্ঠানটিতে। জরাজীর্ণ অবস্থায় পড়ে আছে বছরের পর বছর।