শুক্রবার, ৬ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ,২০শে জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

এর সর্বশেষ সংবাদ

রাজাপুরে স্কুলের অনুষ্ঠানে আ.লীগ নেতারা অতিথি

মো. মাহিন খান, ঝালকাঠি: ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রাজাপুর সরকারি পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৫৮তম বার্ষিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে পুরস্কার বিতরণ পর্বে আওয়ামী লীগ নেতাদের অতিথি করায় ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ উঠেছে।

ঘটনাটি ঘটে গত বৃহস্পতিবার (২২ মে) বিকেলে বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত অনুষ্ঠানে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জোহরা বেগম পিপি অতিথি হিসেবে আমন্ত্রণ জানান উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও মুজিব বাহিনী রাজাপুর শাখার প্রধান মো. নূর হোসেন এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক মো. আমির খসরু বাবুলকে। কিন্তু কোনো বিরোধী রাজনৈতিক দলের কাউকে দাওয়াত দেওয়া হয়নি।

এ দুই আওয়ামী লীগ নেতার উপস্থিতিতে পুরস্কার বিতরণের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তা ঘিরে স্থানীয়ভাবে সমালোচনার ঝড় ওঠে।

বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক মহলে বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। অনেকেই মনে করছেন, একটি নিরপেক্ষ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দলীয় রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার অনুচিত। অনেকে প্রশ্ন তুলছেন, আমন্ত্রিতদের পেছনে আদৌ কোনো গোপন উদ্দেশ্য আছে কি না। ভিডিওতে দেখা যায়, দুই আওয়ামী লীগ নেতার সঙ্গে অনুষ্ঠানে অংশ নিচ্ছেন প্রধান শিক্ষক নিজেও, যা থেকে অনেকেই রাজনৈতিক আনুগত্যের বিষয়টি অনুমান করছেন।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে প্রধান শিক্ষক জোহরা বেগম বলেন, “তারা আমাদের স্কুলের প্রাক্তন শিক্ষক ছিলেন। সেই সম্পর্ক থেকেই আমি তাদের ব্যক্তিগতভাবে দাওয়াত দিয়েছি, রাজনৈতিক পরিচয়ের কারণে নয়। আমি নিজেও কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জড়িত নই।”

এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোস্তফা আলম বলেন, “বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অনুষ্ঠান সম্পর্কে আমাদের কিছু জানায়নি। বিষয়টি দুঃখজনক। আমি শুনেছি ঘটনা সম্পর্কে এবং ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

স্থানীয় রাজনৈতিক মহল মনে করেন, একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত রাখাই শ্রেয়। প্রাক্তন শিক্ষক হলেও সক্রিয় রাজনৈতিক নেতাকে এককভাবে অতিথি করাটা প্রধান শিক্ষকের সঠিক সিদ্ধান্ত ছিল না। বিশেষ করে গণআন্দোলনের সময় রাজনৈতিক প্রতীকধারী কোনো ব্যক্তিকে প্রধান মঞ্চে জায়গা দেওয়াকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে মনে করছেন অনেকে।

এ ঘটনায় অভিভাবক, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। কেউ কেউ মনে করছেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এমন ঘটনা ভবিষ্যতে শিক্ষার পরিবেশ ও শিক্ষার্থীদের মানসিকতায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Tumblr
Telegram

বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *