
আসমা আক্তার সাথী, লোহাগড়া (নড়াইল): নড়াইলের লোহাগড়া পৌর শহরের লক্ষীপাশা গ্রামে এক দৃষ্টি ও বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ব্যক্তির জমি প্রতারণার মাধ্যমে বিক্রি করে প্রায় ১২ লাখ ৫০ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে মৃত জাকির শেখের সৎ ভাই সাজাহান কুটির বিরুদ্ধে।
ভুক্তভোগী মৃত জাকির শেখের কন্যা আমেনা পারভীন জানান, তার পিতা জীবদ্দশায় লক্ষীপাশা মৌজার এসএ খতিয়ানভুক্ত জমির একমাত্র মালিক ছিলেন। তিনি দৃষ্টি ও বুদ্ধি প্রতিবন্ধী হওয়ায় স্বাক্ষর করতে না পারলেও সাজাহান কুটি কৌশলে তার টিপসই সংগ্রহ করেন। ২০২৪ সালের ৭ ডিসেম্বর শিকদার মিজানুর রহমানের কাছে ১.৮৩ শতক জমি ১২ লাখ ৫০ হাজার টাকায় বিক্রি করেন। এই অর্থ আত্মসাৎ করেন সাজাহান কুটি।
আমেনার অভিযোগ, প্রতারক সাজাহান কুটি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন এই অর্থ ব্যাংকে রেখে প্রতি মাসে তাদের এতিম ছোট ভাই আল-আমিন ও আমেনাকে ২০ হাজার টাকা করে প্রদান করবেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো টাকা দেয়া হয়নি। বরং আল-আমিনকে এলাকা ছাড়া করে রাখা হয়েছে যাতে তারা ন্যায্য অধিকার আদায় করতে না পারে।
এছাড়াও অভিযোগ রয়েছে, সাজাহান কুটি পূর্বে মৃত জাকির শেখের পুরনো চুন-সুরকি নির্মিত ছয় কক্ষ বিশিষ্ট ঐতিহ্যবাহী বসতবাড়িটি ভেঙে সরিয়ে নিয়েছেন। জমি বিক্রির বিষয়টি জাকির শেখের সন্তানরা জানার পর সাজাহান কুটি তাদের হাতে তিনটি ১০০ টাকার স্ট্যাম্প (নং: গক ২৪৮৮০৫১, গক ২৪৮৮০৫০, গক ২৪৮৮০৪৯) ধরিয়ে দেন, যেগুলোর আইনি বৈধতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত সাজাহান কুটি জানান, “আমার কাছে ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা ছিল, কিছু টাকা আল-আমিনকে দিয়েছি।তবে তিনি শুরুতে একটি স্ট্যাম্প দেওয়ার কথা স্বীকার করলেও, বাস্তবে তিনটি স্ট্যাম্প দেওয়ার প্রমাণ রয়েছে।
ভুক্তভোগী পরিবার ইতিমধ্যে লোহাগড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও লোহাগড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছে। এতে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানানো হয়।
অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, সাজাহান কুটি এর আগেও সরকারি জমিসহ বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের সম্পত্তি নিজের নামে ও বেনামে করে নেওয়ার অভিযোগে অভিযুক্ত ছিলেন।
এ বিষয়ে লোহাগড়া থানার(ওসি)মো.শরিফুল ইসলাম বলেন, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি, বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।