
এ এম আব্দুল ওয়াদুদ, শেরপুর: শেরপুরে গত বছরের ৪ অক্টোবরের স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যার পানিতে সব হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছিলেন শত শত পরিবার। এ অবস্থায় সরকারি সহযোগিতার পাশাপাশি তাদের সহায়তায় এগিয়ে আসে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী ও দাতব্য প্রতিষ্ঠান। এরই ধারাবাহিকতায় জেলার ১৬০টি অসহায় পরিবারকে আধাপাকা ঘর উপহার দিয়েছে সেবামূলক প্রতিষ্ঠান ‘আস সুন্নাহ ফাউন্ডেশন’।
সোমবার সকালে ঝিনাইগাতী উপজেলার অডিটোরিয়ামে উপকারভোগীদের মাঝে ঘরের প্রতীকী চাবি হস্তান্তর করেন আস সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান শায়খ আহমাদুল্লাহ।
এসময় আস সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেন, জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে মানুষ হিসেবে মানুষকে সহযোগিতা করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি আমরা। মানুষের মধ্যে সেই মানুষটিই উত্তম যিনি মানুষ ও মানবতার কাজ করেন। মানবতার জন্য ভালো কাজ করে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করাই আমাদের মূল উদ্দেশ্য। সেই ধারাবাহিকতায় আজকে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ১৬০টি পরিবারকে ঘর দেওয়া হলো। যারা এই মহান কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন, আল্লাহ সবাইকে উত্তম প্রতিদান দিবেন।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আশরাফুল আলম রাসেল, ‘আস সুন্নাহ ফাউন্ডেশন’ এর মানবসেবা বিভাগের প্রধান মাহবুবুর রহমান চৌধুরী, প্রজেক্ট এক্সিকিউটিভ মো. জোবায়ের ইবনে কামাল, ‘রক্ত সৈনিক বাংলাদেশ’ এর শেরপুর জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মো. আশরাফুল ইসলাম, ইউপি সদস্য মো. জাহিদুল হক মনির প্রমুখ।
এদিকে ঘর পেয়ে যারপরনাই খুশি হতদরিদ্র পরিবারের সদস্যরা। ঝিনাইগাতী উপজেলার বাসিন্দা দিপঙ্কর হাজং বলেন, ‘বন্যায় সব হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছিলাম। সৃষ্টিকর্তার অশেষ কৃপায় আপনাদের সহযোগিতায় এ ঘর পেয়ে আমার এবং আমার পরিবারের সদস্যদের মাথা গোঁজার ঠাঁই ফিরে পেয়েছি। এখন আমরা খুব খুশি।’
‘আস সুন্নাহ ফাউন্ডেশন’ এর মানবসেবা বিভাগের প্রজেক্ট এক্সিকিউটিভ মো. জোবায়ের ইবনে কামাল জানান, গত বছরের ৪ অক্টোবরের স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় শেরপুর জেলায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। বন্যা পরবর্তী ‘আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন’ এর উদ্যোগে তিন হাজার পরিবারকে ত্রাণ সহায়তা, আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত ১৯৯টি পরিবারের মাঝে নগদ ৪০ হাজার টাকা করে মোট ৭৯ লাখ ৬০ হাজার টাকা প্রদান এবং যাদের ঘর একেবারেই নিশ্চিহ্ন হয়েছিল এ রকম ১৬০টি পরিবার মাঝে একটি করে আধা পাকা ঘর নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে। তন্মধ্যে ঝিনাইগাতীতে ১০৫টি, নালিতাবাড়ীতে ৪৯টি, নকলায় ২টি এবং শেরপুর সদর উপজেলায় ৪টি ঘর রয়েছে। ‘আস সুন্নাহ ফাউন্ডেশন’ কর্মকর্তা ও স্বেচ্ছাসেবীদের তত্ত্বাবধানে ঘরগুলোর নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করেছে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান ঢাকা ভার্টেক্স ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড ও শামীম ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড।












