বৃহস্পতিবার, ২০শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ,৫ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

হিলিতে আমদানি-রফতানি বাণিজ্যে ধস

কৌশিক চৌধুরী, হিলি : দফায়-দফায় ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ায় পণ্য আমদানি করে খুব একটা লাভবান হতে পারছেন না হিলি বন্দরের ব্যবসায়ীরা। এছাড়াও চাহিদা মাফিক ঋণপত্র না পাওয়া, পণ্য ছাড় করণে কাস্টমসের হয়রানিসহ নানা জটিলতায় তলানিতে ঠেকেছে এই বন্দরের পণ্য আমদানি-রফতানি বাণিজ্য। কাজ না থাকায় মানবেতর দিন কাটাচ্ছে বন্দরের হাজার খানেক শ্রমিক ও সিএন্ডএফ কর্মচারিরা।

হিলি বন্দরের শ্রমিক সিরাজুল ইসলাম বলেন, হিলি স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি-রফতানি কমে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছে বন্দরের শ্রমিকরা। আগে প্রতিদিনি এইবন্দর দিয়ে ২০০ থেকে ২৫০ ট্রাক বিভিন্ন পণ্য নিয়ে বন্দরে প্রবেশ করতো। সেখানে এখন প্রতিদিন ৩০ থেকে ৪০ টি ভারতীয় ট্রাক বন্দরে প্রবেশ করছে। এদিকে বন্দরে আমদানি রপ্তানি কমে যাওয়ায় আমাদের দৈনিক আয় ও রোজগার কমে যাওয়ায় পরিবার পরিজন নিয়ে বেকায়দায় অনেক শ্রমিকরা। আগে প্রতিদিন আমাদের দৈনিক আয় ছিলো ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা সেখানে এখান দৈনিক আয় প্রায় ১০০ টাকা মতো। এভাবে কতো দিন চলবে ।

হিলি স্থলবন্দর আমদানিকারক দিনেশ পোদ্দার বলেন, হিলি স্থলবন্দর দিয়ে আগে প্রতিদিন ২০০ থেকে ২৫০ পণ্যবাহি ট্রাক পণ্য নিয়ে ভারত থেকে দেশে প্রবেশ করতো। বর্তমান এখন প্রতিদিনি আমদানির ট্রাকের পরিমান দাাঁড়িয়েছে ৪০ থেকে ৫০টি তে। এদিকে দফায়-দফায় ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ায় এবং ভারত থেকে আমদানি করে ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে বন্দর ব্যবসায়ীদের। এইভাবে ডলারের দাম বাড়ার কারনে অনেক ব্যবসায়ী পণ্য আমদানি বন্ধ রেখেছে।

হিলি স্থলবন্দর সিএন্ডএফ এজেন্ট জাবেদ হোসেন রাসেল বলেন, হিলি স্থলবন্দর দিয়ে কম মূল্যে পণ্য আমদানি করা হলেও শুল্কায়ন করা হচ্ছে সর্বউচ্চ মূল্যে। অন্যান্য বন্দরে আমদানির বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা থাকলেও হিলি বন্দরে কাস্টমসের নানা জটিলতায় অনেক আমদানিকারক এই বন্দর দিয়ে পণ্য আমদানি বন্ধ করে দিয়েছেন। চলে যাচ্ছে অন্য বন্দরে। ফলে আশঙ্কাজনক ভাবে কমেছে বন্দরের ব্যবসা-বাণিজ্য।

হিলি বন্দরের আমদানিকারকের প্রতিনিধি অহেদুর রহমান রিপন বলেন, একসময় হিলি স্থলবন্দরে ভারত থেকে প্রতিদিন ২০০ থেকে ২৫০ ট্রাক বিভিন্ন পণ্য নিয়ে বন্দরে প্রবেশ করলেও । বর্তমান ব্যাংকের নানা জটিলতা কারণে আমদানি কমে গেছে। ব্যাংকে এলসি খোলার সময় নির্ধারিত রেট বেধে দিলেও আমদানি করার পরে এলসি পরিষদ করতে গেলে বেঁধে দেওয়া হচ্ছে আরেট রেট । এদিকে বেঁধে দেওয়া রেটের চেয়ে বেশি টাকা বেঁধে দেওযায় আমদানিকারককে গুনতে হচ্ছে বাড়তি টাকা যার কারণে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি আনেকটায় কমে গেছে। এখন প্রতিদিন আমদানি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ ট্রাক বন্দরে প্রবেশ করে।

পানামা হিলি পোর্টের গণসংযোগ কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন মল্লিক প্রতাপ বলেন, আগে প্রতিদিনি এই বন্দর দিয়ে ভারত থেকে বিভিন্ন পণ্য নিয়ে বন্দরে প্রবেশ করতো এবং আমদানি বেশি থাকায় বন্দরে শ্রদিকদের মধ্যে কর্মচঞ্চলতা ছিলো। এছাড়া তাদের দৈনিক আয় ভালো ছিলো। বর্তমান আমদানি কমে যাওয়ায় বন্দরে বেশির ভাগ শ্রমিকরা বেকার জিবন যাপন করছে। বন্দরে আমদানি বাড়লেও আবারও শ্রমিকদের মাঝে কর্মচঞ্চলতা ফিরে আসবে বলে মনে করেন তিনি।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on tumblr
Tumblr
Share on telegram
Telegram

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

যায়যায়কাল এর সর্বশেষ সংবাদ