মঙ্গলবার, ১৭ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ,১লা জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

সরকার ‘পালানোর’ পথ পাবে না: ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সরকারের উদ্দেশে বলেছেন, ‘এখনও সময় আছে নিরাপদে সরে যান, না হয় পালানোর পথ খুঁজে পাবেন না। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগ ১০টি আসনেও জিততে পারবে না।’

আজ শনিবার দুপুরে খুলনার সোনালী চত্বরে বিএনপির গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘বিএনপির সামনে কোনো পথ খোলা নেই। আন্দোলন, আন্দোলন, আন্দোলন। একনায়ক, কর্তৃত্ববাদ সরকারকে হাটিয়ে জনগণের সরকার আনতে হবে।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ভেবেছিল খালেদা জিয়াকে জেলে দিলে বিএনপি শেষ হয়ে যাবে। তবে না, বিএনপি নতুন সাহসে বলীয়ান হয়ে উঠেছে। এই জনসমুদ্র তারই প্রমাণ।’

প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘বীর খুলনাবাসী। আজকেরই সমাবেশ আমাদের ভবিষ্যতের স্বপ্নের নেতা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দূর থেকে দেখছেন। আপনারা নানা বাধার পরও সমাবেশ সফল করেছেন।’

তিনি বলেন, ‘আমার মা, দেশনেত্রী খালেদা জিয়া, দলের চেয়ারপারসন, যাকে অন্যায়ভাবে, বেআইনিভাবে, গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছে। সেই খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে এবং সেই নেতা যিনি আমাদের স্বপ্ন দেখাচ্ছেন, সেই তারেক রহমানের পক্ষ থেকে আপনাদের অভিবাদন জানাচ্ছি।’

গণপরিবহন বন্ধ করে সরকার সমাবেশ ঠেকাতে পারেনি উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আপনাদের এই গণতন্ত্রের যে আকাঙ্ক্ষা, আপনাদের অধিকার আদায়ের সংগ্রাম, যে লড়াইয়ে কি বাধা দিতে পেরেছে, পারে নাই। ইতিহাস বলে, যেকোনো দিন জনগণের ন্যায়সংগত দাবি শুধু শক্তি দিয়ে দমিয়ে রাখা যায় না।’

ফখরুলের অভিযোগ, সমাবেশকে কেন্দ্র করে গত দুই-তিন দিনে ৫ শতাধিক নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। হাজারো নেতা-কর্মীকে আহত করেছে। চুকনগরে তিনজনকে গুলি করেছে, কেশবপুরে কয়েকজন গুলিবিদ্ধ। মোংলায় ট্রলারে আসা কয়েক শ নেতা-কর্মীকে আহত করেছে। ট্রলার ডুবিয়ে দিয়েছে। রূপসা, তেরখাদা, দিঘলয়ার মানুষের একমাত্র বাহন ট্রলারে আসা ১০০ নেতা-কর্মীকে আহত করা হয়েছে।

বিভাগীয় অন্য দুই সমাবেশেও একটি চেয়ার খালি রাখা হয়েছিল দুর্নীতির মামলায় সাজাপ্রাপ্ত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জন্য।

তিনি ‘গৃহবন্দি’ দাবি করে ফখরুল বলেন, ‘আমাদের আশা আকাঙ্খা প্রতীক, গণতন্ত্রের প্রতীক, যিনি সারাটা জীবন এই গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছেন, সংগ্রাম করেছেন, তার জন্য এখানে চেয়ারটি খালি রাখা হয়েছে। তিনি গৃহবন্দি হয়ে আছেন।’

‘তিনি আমাদের বলেছেন, তোমরা সঠিক পথে আছ। এইভাবেই আন্দোলন সংগ্রাম চালিয়ে যাও এবং এই ভাবেই জনগণের অধিকার আদায় করে নিয়ে আসো। তাকে মনে করবার জন্য এই চেয়ারটি খালি রেখেছি।’

সরকার দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করেছে দাবি করে বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, ‘আমাদের অর্থনীতি ধ্বংস করেছে, আমাদের অর্জন ধ্বংস করেছে, আমাদের রাষ্ট্র ব্যবস্থার যতগুলো প্রতিষ্ঠান আছে, সবগুলো ধ্বংস করেছে, মাত্র একটি কারণে, তাদের অবৈধ ক্ষমতা চিরস্থায়ী করার জন্য। তারা জোর করে ক্ষমতায় থাকতে চায়। তারা বিনা ভোটে, জনগণের ভোট না নিয়ে, জনগণকে বঞ্চিত করে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায়। কিন্তু সেটি আর আমরা দেব না।’

নির্বাচন কমিশন গঠনেরও সমালোচনা করেন মির্জা ফখরুল। বর্তমান নির্বাচন কমিশন আওয়ামী লীগের হাতের পুতুল দাবি করেন তিনি। এমনকি এই নির্বাচন কমিশনকে কেউ পাত্তা দেয় না বলেও জানান। তিনি বলেন, ‘নির্বাচনে কমিশন কার তৈরি করা, হাসিনার তৈরি করা। ভালো দেখানোর জন্য কিছু করছে, আরে তাকে তো ডিসি-এসপিরাই মানতে চায় না। তারা আর কী নির্চান করবেন?’

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Tumblr
Telegram

, বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

যায়যায়কাল এর সর্বশেষ সংবাদ