পঞ্চগড় প্রতিনিধি: দেশের সর্ব উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় শুক্রবার চলতি শীত মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা আট দশমিক চার ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার ছিল ১২ দশমিক ছয় ডিগ্রি সেলসিয়াস।
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের কর্মকর্তা জীতেন্দ্রনাথ রায় দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ‘কুয়াশা না থাকা ও মেঘমুক্ত আকাশ হওয়ায় উত্তরের হিমেল হাওয়া সহজে এই অঞ্চলের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে হঠাৎ করে তাপমাত্রার পারদ দ্রুত নিম্নগামী হয়েছে।’
‘তাপমাত্রার এই ধারা আরও কয়েকদিন থাকার সম্ভাবনা আছে,’ বলেন তিনি।
আবহাওয়া অফিস সূত্র জানায়, আট থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকা তাপমাত্রাকে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ, ছয় থেকে আট ডিগ্রি সেলসিয়াস মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ এবং ছয় ডিগ্রি সেলসিয়াসের কম হলে তা তীব্র শৈত্যপ্রবাহ হিসেবে বিবেচিত হয়।
এদিকে মৃদু শৈত্যপ্রবাহের কারণে দৈনিক আয়ের পর নির্ভরশীল খেটে খাওয়া মানুষকে চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হয়েছে।
উত্তরের জেলা বিশেষ করে ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড় জেলার রিকশাশ্রমিক, দিনমজুরের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দিনে রোদের দেখা মিললেও উত্তরের শীতল হাওয়ার কারণে বাইরে কাজ করা কঠিন হয়ে পড়েছে।
পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার মাইক্রোবাস চালক নূর উদ্দীন বলেন, ‘সকাল থেকে সূর্যের দেখা মিললেও শীতল হাওয়ার কারণে বাইরে থাকা বেশ কঠিন।’
একই এলাকার কৃষি শ্রমিক অনিকুল বর্মণ বলেন, ‘হিম শীতল হাওয়ায় হাত ও পা জমে যাচ্ছে। তাই খোলা মাঠে কাজ করা বেশ কষ্টকর হয়ে পড়েছে। তারপরও আলুর বীজ বপনের উপযুক্ত সময় হওয়ায় প্রতিকূল আবহাওয়াতেও কাজ চালিয়ে যেতে হচ্ছে।’
অন্যদিকে শীতের তীব্রতায় শিশু ও বৃদ্ধরা ঠাণ্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। এতে দুই জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে রোগীর সংখ্যাও বাড়ছে।
জানতে চাইলে ঠাকুরগাঁও ২৫০-শয্যা বিশিষ্ট আধুনিক সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার জানান, এক সপ্তাহ ধরে শিশু ওয়ার্ডের ৪৫ শয্যার বিপরীতে প্রায় দুইশ শিশু চিকিৎসা নিচ্ছে। বয়স্ক রোগীর সংখ্যাও শয্যার তুলনায় দ্বিগুণের বেশি। বহির্বিভাগেও রোগীর চাপ অনেক বেড়েছে।
শীতজনিত আক্রান্ত রোগীদের প্রাথমিক পর্যায়ে হাসপাতালে নিয়ে আসার পরামর্শ দিয়ে আবাসিক মেডিকেল অফিসার বলেন, এত রোগী দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠেন এবং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকেও চাপ সামলাতে বেগ পেতে হয় না।