
তামিম ইকবাল রাজু, ববি: বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় সর্বপ্রথম গত বছরের ১৬ জুলাই আবু সাঈদ হত্যার পর ১৭ জুলাই শহীদদের স্মরণে দেশের প্রথম স্মৃতিফলক প্রাথমিকভাবে স্থাপন করেন ববি শিক্ষার্থীরা। সেটিকে পূর্নাঙ্গরূপ দিতে এবার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
বুধবার সকাল ১০ টায় বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সাথে নিয়ে এ স্মৃতিফলকের উদ্বোধন করেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তৌফিক আলম ।
ভিসি আসে ভিসি যায় কিন্তু জুলাইয়ের মতো স্পর্শকাতর বিষয়ে স্মৃতি ফলকের কোনো পরিবর্তন হয় না যেভাবে শিক্ষার্থীরা কংক্রিট ইট দিয়ে একটি দেয়াল উঠিয়ে রেখেছিলেন সেভাবেই অনাদরে পড়ে ছিল এটি। তৎকালীন উপাচার্য ড. বদরুজ্জামান ভুঁইয়া ২০ আগস্ট শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। এরপর অধ্যাপক ড. সূচিতা শরমিন উপাচার্য হলেও এবিষয়ে কোনো পরিবর্তন করেনি। অবশেষে শিক্ষার্থীদের দীর্ঘ এক মাসের আন্দোলনে সেও অব্যহতি পাই তার দায়িত্ব থেকে। তারা কেউই এবিষয়ে কোনো কাজের অগ্রগতি আনতে পারেনি।
অবশেষে ববি অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তৌফিক আলম শিক্ষার্থীদের অনেক দিনের লালিত স্বপ্ন, আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটিয়েছে “জুলাই ৩৬” নামের স্মৃতি ফলকের নির্মাণ কাজ উদ্বোধনের মাধ্যমে। বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের স্মৃতিচিহ্ন হিসেবে ‘জুলাই-৩৬’ স্মৃতিফলক নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করা হয়েছে।
এসময় বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও এলাকাবাসীরা উপস্থিত ছিলেন । স্মৃতি ফলকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের গেইট নং-১ সংলগ্ন স্থানে নির্মিত হবে। ‘জুলাই-৩৬’ স্মৃতিফলকের নকশা করেছেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত্তিকা ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের ২০১৮-২০১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী তমাল রায়।
উদ্বোধনকালে ববি উপাচার্য ড. তৌফিক আলম বলেন, এই স্মৃতিফলক জুলাই আন্দোলনের মর্যাদা ধরে রাখবে।জুলাই আন্দোলনের গুরুত্ব এবং শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীর আবেগ সকল কিছুই এই স্মৃতিফলকের সাথে জড়িত। এটি একটি ইতিহাস হয়ে থাকবে। বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং এলাকাবাসীর সাথে এই স্মৃতিফলকের উদ্বোধন করতে পেরে আমি গর্বিত ও আনন্দিত।
উপাচার্য আরও বলেন, জুলাই বিপ্লবকে স্মরনে রাখতে শিক্ষার্থীদের অন্যতম দাবি ছিলো একটি স্মৃতিফলক নির্মাণ। এই বিপ্লবে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করেছিলো এলাকাবাসী। তাই আজকে শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীদের সাথে নিয়ে জুলাই ৩৬ স্মৃতিফলকের নির্মান কাজের উদ্ভোধন করেছি। আশাকরি খুব দ্রুতই জুলাই ৩৬ স্মৃতিফলকটি দৃশ্যমান হবে।
জুলাই স্মৃতিফলক নির্মান কমিটির সদস্য ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থী শাহীর খান বলেন, স্মৃতিফলকটি ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে দেশের ইতিহাস জানাতে অনুপ্রাণিত করবে এবং সৈরাচারের বিরুদ্ধে রুখে দাড়াতে সাহসী করে তুলবে।