শুক্রবার, ৬ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ,২০শে জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

এর সর্বশেষ সংবাদ

সড়ক দুর্ঘটনা রোধে ট্রাফিক আইন মেনে চলার সংস্কৃতি গড়ে তুলতে প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান

নিউজ ডেস্ক: সড়ক দুর্ঘটনা রোধে ব্যাপকভাবে জনসচেতনতা সৃষ্টির ক্ষেত্রে সকলকে এগিয়ে আসার এবং ট্রাফিক আইন মেনে চলার সংস্কৃতি গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।        
আগামীকাল ২২ অক্টোবর ‘জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস’ উপলক্ষ্যে দেয়া এক বাণীতে তিনি এ আহবান জানান। 
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “সড়ক নিরাপত্তায় সচেতন নাগরিক সৃষ্টির লক্ষ্যে এ বছর ৬ষ্ঠ জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস ২০২২ পালিত হচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘আইন মেনে সড়কে চলি, নিরাপদে ঘরে ফিরি’ নির্ধারণ সময়োপযোগী ও যথার্থ হয়েছে বলে আমি মনে করি। আমি জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস উদ্যাপন উপলক্ষ্যে দেশবাসীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই।”
তিনি বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতা অর্জনের পরপরই যুদ্ধ-বিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠনে আত্মনিয়োগ করেছিলেন। তিনি ১৯৭৪ সালের মধ্যেই মুক্তিযুদ্ধের সময় ধ্বংসপ্রাপ্ত সকল সেতু পুননির্মাণ করে চলাচলের উপযোগী করেন। পাশাপাশি তিনি প্রায় ৪৯০ কিলোমিটার নতুন সড়ক নির্মাণসহ বেশ কিছু নতুন সেতু নির্মাণ করেন। তিনি ১৯৭৩ সালের অক্টোবর মাসে জাপান সফরের সময় জাপান সরকারের নিকট যমুনা নদীর উপর সেতু নির্মাণের প্রস্তাব করেন। 
শেখ হাসিনা বলেন, ‘জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে আমরা ১৯৯৬ সালে সরকার গঠনের পর পাঁচ বছরে ১৫,১২৮ কিলোমিটার পাকা সড়ক নির্মাণ করি এবং মোট ৩৭,১৭১ কিলোমিটার রাস্তা হেরিংবোন বন্ডে রূপান্তরিত করি। এছাড়া, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের আওতায় ৬,৫২৬ কিলোমিটার পাকা সড়ক ও ১০,৮৬৫ কিলোমিটার গ্রামীণ সড়ক নির্মাণ করি। প্রায় ১৯ হাজার বৃহৎ, মাঝারি, ছোট সেতু ও কালভার্ট নির্মাণ করি। পাকশী, ধরলা, দোয়ারিকা, গাবখান, রূপসা, সুরমা (দ্বিতীয়) ও মেঘনা সেতুসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ সেতু নির্মাণের কাজ শুরু করি। সেই সঙ্গে পদ্মা সেতুর সম্ভাব্যতা যাচাই ও এর স্থান নির্ধারণ করি। সড়ক পথে বাংলাদেশ, নেপাল, ভুটান এবং ভারতের উত্তর ও পূর্বাঞ্চলের সাথে যোগাযোগের জন্য সাউথ এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ট্রায়াঙ্গল প্রকল্প গ্রহণ করি।’ 
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর সড়ক নিরাপত্তাকে প্রাধান্য দিয়ে দেশের সকল জাতীয় মহাসড়ক পর্যায়ক্রমে চার বা তদুর্ধ্ব লেন এ উন্নীতকরণ, মেট্রোরেল, বাস র‌্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) লাইন, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, ফ্লাইওভার, ওভারপাস-আন্ডারপাস নির্মাণসহ নতুন নতুন সড়ক, সেতু ও কালভার্ট নির্মাণ/পুননির্মাণের ক্ষেত্রে এক নবযুগের সূচনা করেছে। গত প্রায় ১৪ বছরে ৪,৪০৪টি সেতু, ১৫,০৮৪টি কালভার্ট ও ২২,৪৩৩ কিলোমিটার মহাসড়ক নির্মাণ করেছি। 
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নিজস্ব অর্থায়নে বাঙালির আত্মমর্যাদা, গৌরব ও সক্ষমতার প্রতীক স্বপ্নের পদ্মা সেতু নির্মাণ করে গত ২৫ জুন চলাচলের জন্য খুলে দিয়েছি। কর্ণফুলী নদীর তলদেশ দিয়ে দেশের প্রথম ৩.৪ কিলোমিটার. দীর্ঘ সড়ক সুড়ঙ্গ-পথ তৈরির কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। উন্নত বিশ্বের আদলে আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত উত্তরা হতে মতিঝিল পর্যন্ত ২০.১০ কিলোমিটার দীর্ঘ এমআরটি লাইন-৬ এর কাজ প্রায় সমাপ্তির পথে, যার একাংশ আগামী ডিসেম্বর মাসে চালু হবে ইনশাআল্লাহ।’ 
তিনি বলেন, সরকার সড়ক পরিবহন ব্যবস্থার অভূতপূর্ব উন্নয়নের পাশাপাশি নিরাপদ সড়ক ব্যবস্থা জোরদার করার বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে। সড়ককে নিরাপদ করতে ডিভাইডার স্থাপন, বাঁক সরলীকরণ, সড়ক ৪-লেনে উন্নীতকরণ, মহাসড়কে চালকদের জন্য বিশ্রামাগার নির্মাণ ও গতি নিয়ন্ত্রক বসানোসহ নানামুখী উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। সড়ক পরিবহন সেক্টরে শৃঙ্খলা আনয়ন, দক্ষ চালক তৈরি এবং দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে টাস্কফোর্স গঠন করেছি। আধুনিক, প্রযুক্তি নির্ভর এবং টেকসই ও নিরাপদ মহাসড়ক নেটওয়ার্ক প্রতিষ্ঠা করাই সরকারের লক্ষ্য।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা আমাদের সড়কগুলোকে নিরাপদ হিসেবে গড়ে তুলতে সক্ষম হব।’
তিনি জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস উপলক্ষ্যে গৃহীত সকল কর্মসূচির সর্বাঙ্গীণ সফলতা প্রার্থনা করেন। 

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Tumblr
Telegram

বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *