মঙ্গলবার, ১৭ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ,১লা জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

এর সর্বশেষ সংবাদ

ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে কোনও চক্রান্তই সফল হবে না : জয়

নিজস্ব প্রতিবেদক: ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে কোনও চক্রান্তই সফল হবে না বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়। তিনি বলেন, ছাত্রলীগ একটি বৃহৎ পরিবার, কেউ এর বাইরে গিয়ে মিথ্যা প্রোপাগান্ডা ছড়িয়ে সংগঠনকে বিতর্কিত করছে। এ ধরণের চক্রান্ত যুগ যুগ ধরেই ছিলো। ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে কোনো চক্রান্তই সফল হয়নি।

বৃহস্পতিবার (২২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হল এলাকায় সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য। এসময় সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও কয়েকটি গণমাধ্যমে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি অভিযোগের বিষয় কথা বলেন তারা।

সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় বলেন, যে কেউ যে কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলতে পারেন। একইসাথে যেকারো বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠতেই পারে। তবে সেই অভিযোগের সত্যতা কত খানি রয়েছে তা যাচাই করতে হবে। আমাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো মূলত আমাদের সংগঠনকে বিতর্কিত করার মনোভাব থেকে তোলা হয়েছে। ওইসব অভিযোগের কোনো ভিত্তি নেই।

এক প্রশ্নের জবাবে ছাত্রলীগ সভাপতি বলেন, ‘বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ৩০১ সদস্যের একটি কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটি আছে। সেখানে ৬১ জন ভাইস প্রেসিডেন্ট রয়েছে। ১১ জন জয়েন্ট সেক্রেটারি, ১১জন সাংগঠনিক সম্পাদক, ৩০ জন সম্পাদকমণ্ডলী এবং আরও সম্পাদক, সহ সম্পাদক, উপসম্পাদক মিরে ৩০১ জন রয়েছেন। এখান থেকে পাঁচ থেকে সাতজন কি উদ্দেশ্যে চক্রান্ত ও প্রপাগাণ্ডা ছড়াচ্ছেন- সে বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি।

তিনি আরও বলেন, ছাত্রলীগ একটি বৃহৎ পরিবার, আমরা কেউই কি পরিবারের কথা বাইরে গিয়ে বলে পরিবারকে বিতর্কিত করি? ‘আমরা করি না।’ তারা বারবার পরিবারের বাইরে যেয়ে মিথ্যা প্রপাগান্ডা ছড়িয়ে সংগঠনকে বিতর্কিত করছেন। আমরা বলতে চাই এ ধরণের চক্রান্ত যুগ যুগ ধরেই ছিলো। প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তই অনেকে অনেক সময় মানেননি। এরকম ইতিহাসও আমরা দেখেছি।

জয় বলেন, দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে আমরা কোনো রকম গাফিলতি করিনি। সংগঠনকে বিতর্কিত করার জন্য যারা এ ধরণের প্রপাগাণ্ডা ছাড়াচ্ছেন তাদের কর্মকাণ্ড খতিয়ে দেখা উচিত। আমাদের বাংলাদেশ ছাত্রলীগের অভিভাবক প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার নির্দেশে আমরা সবাই পরিচালিত।

আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় নেতৃবৃন্দ ও ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতারা এ বিষয়ে নিজেদের অভিমত ব্যক্ত করেছেন। তারা বলছেন, অভিযোগগুলো কেবলমাত্র ছাত্রলীগকে সাংগঠনিকভাবে বিতর্কিত করার জন্যই সামনে আনা হয়েছে। যারা এসব অভিযোগ তুলেছেন তারা তাদের স্বার্থন্বেষী উদ্দেশ্য সফল করতে এগুলো করছেন।

আওয়ামী লীগের একজন জ্যেষ্ঠ নেতা বলেছেন, বিভিন্নভাবে ছাত্রলীগকে বিতর্কিত করতে একটি মহল উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে কাজ করছে। এর সাথে জামায়াত-শিবির থেকে শুরু করে বিএনপি এবং এই লাইনের যারা আছে তাদের ষড়যন্ত্রের অংশ। ছাত্রলীগ নামধারী লোক দিয়ে এগুলো করানো হচ্ছে- এমন প্রশ্নের উত্তরে ছাত্রলীগ সভাপতি বলেন, ‘আমাদের অগ্রজ যা বলেছেন তা অতীত অভিজ্ঞতা থেকে বলেছেন। অতীতেও সংগঠনকে বিতর্কিত করার জন্য যারা নানা অভিযোগ তুলেছেন তাদের ব্যাকগ্রাউন্ড ছাত্রদল বা জামাত শিবিরের সাথে সম্পর্কিত ছিলো। আমরা আমাদের অগ্রজের সাথে অনেকটা একমত।

সাম্প্রতিক সময়ে কেন্দ্রীয় দুই নেতা স্বেচ্ছাসেবক লীগের এক নেতাকে হত্যার হুমকি দেন। এরকম একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরালও হয়েছে। এ বিষয়ে ছাত্রলীগের পদক্ষেপ কি জানতে চাইলে জয় বলেন, ‘ছাত্রলীগ কোনো অপরাধীকে কখনো ছাড় দেয় না। কেউ অপরাধ করলে অবশ্যই বাংলাদেশের প্রচলিত আইনে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আর সাংগঠনিকভাবে যে ব্যবস্থা নেওয়ার বিধান রয়েছে আমরা সেই ব্যবস্থাই নেবো।’

ছাত্রলীগে কেন্দ্রীয় কমিটিতে নতুন করে কয়েকজনকে পদায়ন করা নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে- এ বিষয়ে জানতে চাইলে ছাত্রলীগ সভাপতি বলেন, ‘কোনো নেতা বা কর্মী বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হলে তার পদ অটোমিটক বাতিল হয়ে যায়। তখন অটোমেটিক সেই পদে নতুন করে ত্যাগী কর্মীদের মূল্যায়ন করা হয়। যারা নতুন ছাত্রলীগ করেন তারা এটি জানেন না হয়তো।’

ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে তোলা অভিযোগের বিষয়ে সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য বলেন, যারা অভিযোগ তুলেছেন তাদের কর্মকাণ্ডে তারা আগে বিএনপি বা জামাত শিবিরের সাথে সম্পৃক্ত না থাকলেও তাদের মতোই দেখা যাচ্ছে। ছাত্রলীগের দেখভাল করার জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের সাথেও তারা কোনো পরামর্শ করেননি। তারা সংগঠনকে কেবলমাত্র বিতর্কিত করার জন্যই এসব কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, সংগঠনের বদনাম করার জন্য তুচ্ছ ঘটনাগুলোকেও ছাত্রলীগের নামে চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন চক্রান্তকারীরা। বিরোধীদলের ছাত্র সংগঠনগুলোকে লক্ষ্য করলে দেখা যায়, সর্ব প্রথমে ছাত্রলীগকেই ‘টার্গেট’ করা হয়। ছাত্রলীগের বদনাম করতে তারা সবসময় সচেষ্ট থাকেন। ছাত্রলীগের মধ্যে থেকেই যারা এমন কাজ করছেন, তাদের সংখ্যা অত্যন্ত নগণ্য। ছাত্রলীগকে দুর্বার গতিতেই এগিয়ে যাবে। কোনো অপশক্তিই এ সংগঠনকে থামাতে পারবে না।

বিরোধীদলের কর্মকাণ্ড ছাত্রলীগকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে লেখক ভট্টাচার্য বলেন, বিরোধীদল শান্তিপ্রিয়ভাবে যেকোনো ধরণের কর্মসূচি পালন করতে পারবে। এটি আমাদের জ্যেষ্ঠ নেতারাও একাধিকবার বলেছেন। আমরা সেই নির্দেশই পালন করছি। তারা যদি অনৈতিক কোনো কর্মকাণ্ড করে তাহলে সাধারণ শিক্ষার্থীরাই তাদেরকে প্রতিহত করবে। সেখানে ছাত্রলীগের কর্মীরও প্রয়োজন পড়বে না।

নিজেদের প্রস্তুতির বিষয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে সাংগঠনিকভাবে দুর্বল করার অপচেষ্টা কখনো সফল হবে না। বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সাংগঠনিকভাবে শক্ত অবস্থাতেই রয়েছে। ছাত্রলীগের দুর্বার গতি কেউ থামাতে পারবে না।

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Tumblr
Telegram

বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

যায়যায়কাল এর সর্বশেষ সংবাদ